ঢাকা ১০:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
Logo ঝিনাইগাতীতে বন্য হাতির আক্রমনে কৃষক আহত Logo ”স্মৃতিতে রবে চিরদিন ” (সালমান শাবনূর অমর জুটি) Logo শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে কৃষি ঋণ মেলা অনুষ্ঠিত Logo ডোমারে রুপসা ট্রেনের সাথে মিতালী ইঞ্জিনের মুখোমুখি সংর্ঘষ Logo আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে বই বিতরন অনুষ্ঠিত হয় Logo দিনাজপুরে সড়কে প্রাণ গেল মোটরসাইকেল আরোহীর Logo টাঙ্গাইলের বাসাইলে ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত Logo সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় সম্মাননা পদক পেলেন মোজাম্মেল হোসেন বাবু Logo কালিহাতিতে অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করছে হামিদপুরের ব্যাটারী বাবলু সাহা Logo দিনাজপুরের বিরলে পূর্ণ ভবা নদীর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার চার দিন পর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ
বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম...সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে

কালিহাতিতে অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করছে হামিদপুরের ব্যাটারী বাবলু সাহা

শুভ সাহাঃ বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০২:৪০:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৫০২ বার পড়া হয়েছে

শুভ সাহাঃ বিশেষ প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার কালিহাতী এলাকায় অবৈধভাবে গাছের গুঁড়ি ও কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে।

অথচ এ কারখানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। নেই কোনো উল্লেখযোগ্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
এ কারখানার চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে,নষ্ট হচ্ছে ফসল সহ নানা চাষাবাদী জমি ও পরিবেশ দূষণের উপর মারাত্মক হুমকি নিয়ে অাসছে বলে তথ্য সুনিশ্চিত করা হয়েছে।

এছাড়াও আশপাশের এলাকার মানুষ জ্বর কাশিসহ নানা সমস্যায় ভুগছে বলে জানাযায়।

কালিহাতী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলী আকবর জব্বারের পরিত্যক্ত ইটভাটা প্রাঙ্গনে হামিদপুরের অবৈধ প্রভাবশালী ব্যাটারি ব্যবস্যায়ী বাবলু সাহা এই কয়লা তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে এখানে গাছের গুঁড়ি দিয়ে কয়লা তৈরি করছেন তিনি। কারখানায় রয়েছে সাতটি চুল্লি।
বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিক নিয়ে এসে কাজ করানো হচ্ছে। তিন ফসলি জমি এলাকায় পরিত্যক্ত ইটভাটায় মাটি ভরাট করে এ কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে।

টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কালিহাতী বনবিভাগ থেকে সিলিমপুর সড়ক সংলগ্ন পৌরসভার কালিহাতী গ্রামে অবস্থিত এ কয়লা তৈরির কারখানা।
দূরত্ব প্রায় পোয়া কিলোমিটার।

সরজমিনঘুরে জানাযায়, প্রায় ১৫ শতাংশ জায়গাজুড়ে কয়লা তৈরির কারখানা।
চারদিকে উঠতি আমন ফসলের মাঠ ও বসতবাড়ি।
ইট দিয়ে চুল্লি বানিয়ে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়েছে।
চুল্লিতে গাছের গুঁড়ি পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে।
চুল্লির চারদিকে রাখা গাছের গুঁড়ি ও শুকনা কাঠ-লাকড়ি। মোট সাতটি চুল্লিতে আগুন জ্বলছে।
কালো ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে গেছে।
চারপাশে বিভিন্ন আকারের গাছের গুঁড়ি রাখা হয়েছে।
এক পাশ দিয়ে ছোট কয়লা বের করা হচ্ছে।
অন্য পাশে সেই কয়লা শুকানো হচ্ছে।
বাকি জায়গায় বস্তায় ভর্তি করে রাখা হয়েছে কয়লা।
প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়।
প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ২৫০ থেকে ৩০০ মন কাঠ পোড়ানো হয়।
কাঠ পুড়ে কয়লা হয়ে গেলে সেগুলো বের করে ঠান্ডা করে বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সচেতন মহল বলছেন, এ এলাকায় অনেক গাছপালা ছিল।
কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানোর কারণে আমাদের শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগ দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যক্তি জানান, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় হামিদপুর এলাকার ব্যাটারি ব্যবস্যায়ী বাবলু সাহা সরকারি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে রাস্তার সাথে কয়লা তৈরির কারখানা স্থাপন করে রাত-দিন কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছেন। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন।
এদিকে এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর নানা ধরনের হুমকি-ধামকি নেমে আসে বলে অভিযোগ করে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে চুল্লি মালিক বাবলু সাহা বলেন, কালিহাতী পৌরসভা থেকে আমাকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে কয়লা তৈরি করার জন্য। এখানে তো অবৈধ কিছু করা হয়না যে প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। তার দাবি এভাবে চুলায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরিতে পরিবেশের কোনো ক্ষতিকর দিক নেই।
এবিষয়ে কালিহাতী পৌরসভার মেয়র নুরুন্নবী সরকার বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. সাহেদুর রহমান বলেন, কয়লা তৈরিতে এসব চুলায় কাঠ পুড়িয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করা হচ্ছে, সেখানে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফলে শিশুসহ বয়স্করাও শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসের সংক্রামনজনিত সমস্যার সম্মুখীন হবে।

এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসেইন বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য আমার কাছে ছিল না।খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কালিহাতিতে অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করছে হামিদপুরের ব্যাটারী বাবলু সাহা

আপডেট সময় : ০২:৪০:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩

শুভ সাহাঃ বিশেষ প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার কালিহাতী এলাকায় অবৈধভাবে গাছের গুঁড়ি ও কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে।

অথচ এ কারখানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। নেই কোনো উল্লেখযোগ্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
এ কারখানার চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে,নষ্ট হচ্ছে ফসল সহ নানা চাষাবাদী জমি ও পরিবেশ দূষণের উপর মারাত্মক হুমকি নিয়ে অাসছে বলে তথ্য সুনিশ্চিত করা হয়েছে।

এছাড়াও আশপাশের এলাকার মানুষ জ্বর কাশিসহ নানা সমস্যায় ভুগছে বলে জানাযায়।

কালিহাতী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলী আকবর জব্বারের পরিত্যক্ত ইটভাটা প্রাঙ্গনে হামিদপুরের অবৈধ প্রভাবশালী ব্যাটারি ব্যবস্যায়ী বাবলু সাহা এই কয়লা তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে এখানে গাছের গুঁড়ি দিয়ে কয়লা তৈরি করছেন তিনি। কারখানায় রয়েছে সাতটি চুল্লি।
বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিক নিয়ে এসে কাজ করানো হচ্ছে। তিন ফসলি জমি এলাকায় পরিত্যক্ত ইটভাটায় মাটি ভরাট করে এ কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে।

টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কালিহাতী বনবিভাগ থেকে সিলিমপুর সড়ক সংলগ্ন পৌরসভার কালিহাতী গ্রামে অবস্থিত এ কয়লা তৈরির কারখানা।
দূরত্ব প্রায় পোয়া কিলোমিটার।

সরজমিনঘুরে জানাযায়, প্রায় ১৫ শতাংশ জায়গাজুড়ে কয়লা তৈরির কারখানা।
চারদিকে উঠতি আমন ফসলের মাঠ ও বসতবাড়ি।
ইট দিয়ে চুল্লি বানিয়ে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়েছে।
চুল্লিতে গাছের গুঁড়ি পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে।
চুল্লির চারদিকে রাখা গাছের গুঁড়ি ও শুকনা কাঠ-লাকড়ি। মোট সাতটি চুল্লিতে আগুন জ্বলছে।
কালো ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে গেছে।
চারপাশে বিভিন্ন আকারের গাছের গুঁড়ি রাখা হয়েছে।
এক পাশ দিয়ে ছোট কয়লা বের করা হচ্ছে।
অন্য পাশে সেই কয়লা শুকানো হচ্ছে।
বাকি জায়গায় বস্তায় ভর্তি করে রাখা হয়েছে কয়লা।
প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়।
প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ২৫০ থেকে ৩০০ মন কাঠ পোড়ানো হয়।
কাঠ পুড়ে কয়লা হয়ে গেলে সেগুলো বের করে ঠান্ডা করে বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সচেতন মহল বলছেন, এ এলাকায় অনেক গাছপালা ছিল।
কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানোর কারণে আমাদের শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগ দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যক্তি জানান, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় হামিদপুর এলাকার ব্যাটারি ব্যবস্যায়ী বাবলু সাহা সরকারি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে রাস্তার সাথে কয়লা তৈরির কারখানা স্থাপন করে রাত-দিন কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছেন। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন।
এদিকে এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর নানা ধরনের হুমকি-ধামকি নেমে আসে বলে অভিযোগ করে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে চুল্লি মালিক বাবলু সাহা বলেন, কালিহাতী পৌরসভা থেকে আমাকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে কয়লা তৈরি করার জন্য। এখানে তো অবৈধ কিছু করা হয়না যে প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। তার দাবি এভাবে চুলায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরিতে পরিবেশের কোনো ক্ষতিকর দিক নেই।
এবিষয়ে কালিহাতী পৌরসভার মেয়র নুরুন্নবী সরকার বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. সাহেদুর রহমান বলেন, কয়লা তৈরিতে এসব চুলায় কাঠ পুড়িয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করা হচ্ছে, সেখানে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফলে শিশুসহ বয়স্করাও শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসের সংক্রামনজনিত সমস্যার সম্মুখীন হবে।

এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসেইন বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য আমার কাছে ছিল না।খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন