দীঘিনালায় ইউপিডিএফের উদ্যোগে নির্মিত কাঠের সেতু উদ্বোধন

- আপডেট সময় : ১০:২২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২
- / ৪৪০ বার পড়া হয়েছে
রুপম চাকমাঃ সাজেক বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রতিনিধি
দীঘিনালার বাবুছড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শুকনাছড়ি এলাকায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও স্থানীয় উদ্যোগে নির্মিত ৯০ ফুট ৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ৪ ফুট প্রস্থের একটি কাঠের সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়া একই এলাকার বাসিন্দা নিরতা রঞ্জন চাকমা নামে এক অসহায় গ্রামবাসীর জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২২) সেতুটি উদ্বোধন করেন ইউপিডিএফের দীঘিনালা ইউনিটের সমন্বয়ক মিল্টন চাকমা, সংগঠক জুয়েল চাকমা এবং এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সুনীতি চাকমা ও বিজয় কান্তি চাকমা।
এর আগে ৮ দিন ধরে ইউপিডিএফের নেতা-কর্মী ও এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে শুকনাছড়ি ছড়ার উপর কাঠের সেতুটি নির্মাণ করেন। এটি নির্মাণ করতে ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীসহ অন্তত ৪৫ জন লোক অক্লান্তভাবে কাজ করেছেন। ইউপিডিএফ সংগঠক সজীব চাকমার পরিকল্পনা ও নেতৃত্বেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। আর তাকে সার্বক্ষণিক সাহায্য করেছেন অমর কৃঞ্চ চাকমা, বিন্দু চাকমা, আশাপূর্ণ চাকমা ও জ্ঞান প্রসাদ চাকমা।
‘আত্মশক্তিই আসল শক্তি, পরমুখাপেক্ষিতা নয়, পাড়া-গ্রাম বসবাসযোগ্য করতে যুবসমাজ অগ্রণী হও’ এই শ্লোগানে সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে গতকাল এক সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউপিডিএফ সংগঠক জুয়েল চাকমা ও সঞ্চালনা করেন ইউপিডিএফ সংগঠক সজীব চাকমা। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াসোনা চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখা সাংগঠনিক সম্পাদক মিথুন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিলা উপজেলা সভাপতি জ্ঞান প্রসাদ চাকমা, স্থানীয় যুব সমাজের প্রতিনিধি অক্ষয় চাকমা, শুকনাছড়ি এলাকার মুরুব্বী সুনীতি কুমার চাকমা ও পুর্ণ সাধন চাকমা প্রমুখ।
সভায় এলাকার মুরুব্বী সুনীতি কুমার চাকমা বলেন, এক সময় এই এলাকায় কোন রাস্তা-ঘাট ছিলো না। এমনকি বর্তমানে যে মাইনী নদীতে নৌকা চলছে তাও ছিলো না। ১৯৮৬ সালে পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ ছিলো। সে সময় আমরা ভারতে শরনার্থী জীবন অতিবাহিত করি। পার্বত্য চুক্তির পরে ফিরে এসে এলাকায় নতুন করে আবার বসতি গড়ে তুলেছি। এতদিন ছড়ায় সেতু না থাকার কারণে অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করতে হতো।
তিনি আরো বলেন, আজকে ইউপিডিএফের উদ্যোগে এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে যে সেতুটি নির্মাণ করে করে দেওয়া হয়েছে এটি নির্মাণ করতে কমপক্ষে ৩-৪ লক্ষ টাকা ব্যয় হতো। যা এলাকাবাসীর সাধ্যের মধ্যে ছিল না। তিনি স্বেচ্ছাশ্রমে সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় ইউপিডিএফকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, পার্টি ও এলাকার জনগণ মিলে যে কোন কাজ করলে সহজ হয়। তাছাড়া উন্নয়নমূলক কাজ করতে হলে সঠিক বা ভালো পার্টির প্রয়োজন হয়। সেভাবে ইউপিডিএফ জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী দয়াসোনা চাকমা বলেন, এখানে যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে তা জনগণের আন্তরিক সহযোগিতার কারণে সম্ভব হয়েছে। সেতুটি নির্মাণে এলাকার অনেকে অক্লান্ত শ্রম দিয়েছেন। জনগণ ও পার্টি ঐক্য থাকলে যে কোন কাজ অসম্ভব কিছু নেই।
ইউপিডিএফের নেতৃবৃন্দ বলেন, পার্টি ও জনগণের ঐক্য হচ্ছে সবচেয়ে বড় ঐক্য। আমরা যদি সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারি তাহলে কঠিন কাজই সহজভাবে করতে পারি। আজকে এই সেতুটি নির্মাণ তা-ই প্রমাণ করেছে।
তারা পার্টি প্রতিষ্ঠার দুই যুগ উপলক্ষে এলাকাবাসীর জন্য এই সেতু ও এক গ্রামবাসীর জন্য ঘর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে পারায় এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এর মাধ্যমে পার্টি ও জনগণের মধ্যেকার সম্পর্ক আরো জোরদার হবে নেতৃবৃন্দ আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং সেতু ও ঘর নির্মাণে যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা প্রদান করেছেন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।